জিপিএইচ ইস্পাত-মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা - ২০১৮

অর্থনেতিক বৈষম্যের মধ্যেই ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বীজ রোপিত ছিল। অর্থনৈতিক খাতে অধিকতর উন্নয়ন ও সমতা সৃষ্টি হলেই মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত ত্যাগের সফলতা আসবে” ২৪ ডিসেম্বর অপরাহ্নে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জিপিএইচ ইস্পাত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠানে বক্তারা উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য জিপিএইচ ইস্পাতই প্রথম কর্পোরেট হাউজ যারা প্রথম চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানালো।এই সম্মাননা অনুষ্ঠান বীর মুক্তিযোদ্ধা,বিভিন্ন কমান্ডারদের বিরাট মিলনমেলায় পরিণত হয়।
প্রধান অতিথির ভাষণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’র মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন “২০১৮ সালে এই ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী বীরদের সম্মাননা জানানো জিপিএইচ ইস্পাতের একটি মহতী উদ্যোগ। জিপিএইচ ইস্পাত’র মতো সামাজিক দায়বদ্ধ কর্পোরেট হাউসের এই উদ্যোগ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুসরনীয়। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্মও যাতে ৭১’র চেতনাবাহী হয় সেদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের খেয়াল রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে চেম্বার সভাপতি জনাব মাহবুবুল আলম বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মাননা দিচ্ছে তার জন্য বেসরকারী খাতের এপেক্স ট্রেড বডির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের ৭১’র মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রামের মতো আগামীতেও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বেসরকারীখাতকে সংগ্রামে দৃঢ় থাকতে হবে।
জিপিএইচ ইস্পাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৯৭১ সালের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রাম না করলে আমরা এই বাংলাদেশ পেতাম না। এই সম্মাননা প্রদান করে পরোক্ষে জিপিএইচ ইস্পাতই সম্মানিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের বাজেট প্রায় ৫ লক্ষ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকের তুলনামূলক পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। অনুষ্ঠানে জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নগর ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ।
সম্মাননা প্রাপ্ত ৭১’র মুক্তিযোদ্ধা ফটিকছড়ি অঞ্চলের বি.এল.এফ. কমান্ডার মির্জা আবু মনসূর তার সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,“৭১’র মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ আমার জীবনের স্মরনীয় ঘটনা। তৎকালীন নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য হিসেবে আমাদের মরণপন সংগ্রাম ছিলো বিজয় অর্জন করা।
সম্মাননা প্রাপ্ত চট্টগ্রাম নগরীর বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স এর গ্রুপ কমান্ডার ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন- “আমাদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মর্মবানী পৌঁছাতে পারলেই এ ধরনের সম্মাননা অনুষ্ঠান সার্থক হবে। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরে বলেন, এখনও ইংরেজী সাইনবোর্ড লেখা হয়। আমরা কালো কালি লেপন করে একটা ছোট উদ্যোগ নিয়েছি। এখন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এতে সহয়তা দিচ্ছে। এ ভাবেই ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যামের মুক্তিযুদ্ধের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ডা. আবু ইউসুফ চৌধুরী বলেন, দেশকে যে পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য আমরা হাতিয়ায় হাতে নিয়েছিলাম, তারা অনেকেই অবহেলিত। জিপিএইচ ইস্পাত এর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর যে উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এবং আগামীতেও তাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জিপিএইচ যে ঘোষণা দিয়েছেতা অভিনন্দনের দাবী রাখে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সম্মাননা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট, শাল, আর্থিক সম্মাননার চেক হস্তান্তর করেন। প্রধান অতিথিকে ক্রেস্ট প্রদান করেন জিপিএইচ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ অতিথিকে ক্রেস্ট প্রদান করেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে নগর, জেলার বিভিন্ন কমান্ডারগণ, শহীদ পরিবারের সদস্যগণ ও নতুন প্রজন্মের সদস্যরা উপস্তিত ছিলেন।